Menu

Wednesday, April 6, 2016

পুলিশ পেটানোর আলোচিত ঘটনায় ‘ক্ষুব্ধ’ প্রধানমন্ত্রী, যে-কোন মুহুর্তে মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন জয়




আবারো বিতর্কে জড়িয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। এবার এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এর আগে যুগ্মসচিবের কক্ষ ভাঙচুর ও ২০১২ সালে টিম কর্মকর্তা হিসেবে মাঠে একবার পিস্তল হাতে ঢুকে সমালোচিত হয়েছিলেন আরিফ খান জয়। এছাড়াও নিজ এলাকার চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে পেটানো সহ নানা ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন সাবেক এই ফুটবল তারকা।
তবে এ দফায় পুলিশের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন ও মারপিটের আলোচিত ঘটনায় যে কোনো মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হতে পারে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়কে।

সরকারের একাধিক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতা ও দায়িত্বশীল সুত্র জানিয়েছে , গত শনিবার মধ্য রাতে আশুলিয়ায় যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারানো এবং তার হাতে এক পুলিশ কর্মকর্তার লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় সরকার ও আওয়ামী লীগে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এরপরই তার দিকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রিসভায় আবারো সতর্ক বার্তা দিয়ে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের সাম্প্রতিক আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় ‘কথা ও আচরণে সতর্ক থাকার জন্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন ‘ বলে জানা গেছে।

বৈঠকের পর মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেওয়া একাধিক সিনিয়র মন্ত্রী জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার বিষয়টি নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। তারা বলেছেন, মন্ত্রী হয়ে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ কিছুতেই সহ্য করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। স্পষ্ট করে বলেছেন, এসব অপকর্মের দায় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নেবেন না।

অন্যদিকে, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে অশালীন আচরণ ও দেখে নেয়ার হুমকির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিমকে কমিটির প্রধান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল । সোমবার এক অনুষ্ঠানে একথা জানিয়েছেন তিনি।
সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, একটি ঘটনায় অভিযোগ এসেছে। এখন বিষয়টি প্রথমে তদন্ত করে দেখা হবে। ঘটনাটা কীভাবে হলো। এখানে কার গাফিলতি ছিল। সবকিছু দেখে-শুনেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরইমধ্যে বিষয়টি তদন্তে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিমকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নীতিনির্ধারক নেতা জানিয়েছেন, মন্ত্রিসভা থেকে সরতে হচ্ছে উপমন্ত্রীকে। তবে কবে নাগাদ তিনি (আরিফ খান জয়) পদত্যাগ করবেন, তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অপেক্ষায় থাকতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার (২ এপ্রিল) আশুলিয়া থানার এক এসআইকে মারধর করার অভিযোগ উঠে । এঘটনায় আশুলিয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

সাধারণ ডায়েরিতে (৬৬নং) ওই পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, শনিবার (২ এপ্রিল) ভোরে সিরাজগঞ্জ থেকে উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় তার ব্যক্তিগত গাড়ি ( ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৫-১০৮৩) নিয়ে ঢাকা আসার পথে আশুলিয়ার নবীনগর এলাকায় গাড়ি আইল্যান্ডের ওপর উঠে পড়ে। এসময়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মলয় কুমার সাহা এগিয়ে গেলে তাকে উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করেন ও শাসান। এসময় উপমন্ত্রী পুলিশের উপপরিদর্শককে (এসআই) বলেন, ‘তুই কেন আমাকে নিরাপত্তা দিতে আসছিস? আমি কি তোর কাছে নিরাপত্তা চাইছি। তুই কি আমার নিরাপত্তা দিবি? তুই কয়টা গুলি করতে পারিস, আর আমি কয়টা গুলি করতে পারি তুই দেখবি?’

তিনি আরো লিখেন, ‘আমি তথাপিও আমার ওপর অর্পিত দায়িত্বের কথা বললে, উনি আমার অনেক ক্ষতি করে ফেলবেন এবং পেছনে আসলে আমার চাকরি খেয়ে ফেলবেন বলে শাসিয়ে দুর্ঘটনাস্থলে গাড়ি রেখেই নবীনগরের দিকে দৌড় দেন। আমি ও সাভার থানার অফিসার উনার পেছনে দৌঁড়াতে দৌঁড়াতেই মোবাইল ফোনে ওসি স্যারকে (আশুলিয়া থানা) বিষয়টি জানাই। ওসি স্যার যে কোনো অবস্থায় উনাকে নিরাপত্তা প্রদানের নির্দেশ দেন।’

এরপর উপমন্ত্রী মহোদয় নবীনগর ফ্লাইওভারের কাছে গিয়ে রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী খালেক পরিবহনের ঢাকা মেট্রো ব ১১-৬৮-৪২ এর সুপারভাইজারকে ধাক্কা মেরে বাসে উঠে যান বলেও জিডিতে উল্লেখ করা হয়। তিনি জিডিতে লেখেন, ‘বিষয়টি ওসি স্যারকে জানালে তিনি বাসে উঠে ভিআইপি নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশ দেন। আমি সরকারি গাড়ি নিয়ে উনার পিছে পিছে যাওয়া শুরু করি। বিএলআর এর গেইটের সামনে থামামাত্র আমি বাসে উঠতে গেলে উপমন্ত্রী মহোদয় আমাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়।’

পরে উপমন্ত্রী গাবতলী পৌছে বাস থেমে নেমে সিএনজি যোগে মিরপুর মাজার রোডের দিকে চলে যায়। পরে এসআই ময়ল সাহা আশুলিয়া থানায় ফিরে আসেন।

এরপর গণমাধ্যম

No comments:

Post a Comment