চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের অবসানের পর নব্বই দশকের শেষের দিকে ঢাকাই চলচ্চিত্রে কাটপিস সিনেমার আগ্রাসন শুরু হয়।
অশ্লীলতার যাতাকলে সিনেমাপ্রেমী মানুষ হলবিমুখ হতে শুরু করেন। আর এই সময় ঢালিউডে ঝড় তোলা চিত্রনায়িকা ময়ূরীর আগমন ঘটে। কাটপিস সিনেমার সবচেয়ে বেশি চাহিদাসম্পন্ন অভিনেত্রী ছিলেন তিনি। তখন এ অভিনেত্রী স্বেচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বেশকিছু অশ্লীল সিনেমায় দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে। দেশীয় চলচ্চিত্র সুস্থ ধারায় ফিরলে অনেকটাই অন্তরালে চলে যান এ অভিনেত্রী।
তিনি এখন চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে আড়ালে রেখেছেন। রুপালি জগতের বাইরে কিভাবে কাটছে তার দিন? এটা জানতে বেশ কয়েকদিন তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন এ প্রতিবেদক। কয়েকবার তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানা যায় তার দিনযাপনের কথা।
সাংবাদিক শুনলেই অজানা কারণে এড়িয়ে যেতে চান এ অভিনেত্রী। চলচ্চিত্রের কোনো কাজ করছেন না বলেই মোবাইল ফোন রেখে দিতে চান তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কেন কথা বলতে চান না? এমন প্রশ্নের জবাবে অভিমান ভরা একই কথা জানান। তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে মনগড়া নেতিবাচক খবর প্রকাশ করেছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। অথচ এসব নিউজের সত্যতা নেই। তাই তিনি কথা কম বলতে চান।
সব সংবাদিক তো একই রকম নয়, এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সবাই এমন নয়, এ সময়ের সাংবাদিকদের আমি চিনি না। তাই কথা বলতে চাচ্ছি না।’
চলচ্চিত্রের কোনো কাজ তার হাতে নেই। তিনি এখন স্টেজ শোয়ে অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া তার মেয়েকে নিয়ে বাসায়ই সময় কাটাচ্ছেন। বছরের শুরুর দিকে দেশের বাইরে যাওয়ার কথাও ভাবছেন বলে জানান এ অভিনেত্রী।
তিনি আরো জানান, আগামী ৯ ডিসেম্বর গাজীপুরের কাশেমপুরে বারেন্ডা পার্কের একটি স্টেজ শোয়ে পারফর্ম করবেন ময়ূরী। এতে তার সঙ্গে থাকবেন খল অভিনেতা শিবা সানুসহ অনেকে।
অশ্লীল সিনেমা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে চান না বলেও জানান ময়ূরী।
দুই বছর আগে ‘ডার্টি পিকচার’ সিনেমার আদলে একটি সিনেমা নির্মাণেরও ঘোষণা দিয়েছিলেন ময়ূরী। তবে এটিও এখন বন্ধ রেখেছেন।
ময়ূরী অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘মৃত্যুর মুখে’ এবং সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ‘বাংলা ভাই’। নব্বই দশক থেকে এ পর্যন্ত ময়ূরী অভিনীততিনশত সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাগুলোতে তিনি যতটা প্রশংসিত হয়েছেন তার চেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন। নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘চার সতীনের ঘর’ শিরোনামের সিনেমায় শক্তিমান চলচ্চিত্রাভিনেতা আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন ময়ূরী।
গত বছর ময়ূরী’র স্বামী রেজাউল করিম খান মিলন না ফেরার দেশে চলে যান। ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে মিলন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মিলন টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
No comments:
Post a Comment