পোস্টারজুড়ে আমার ছবি। নিচে সুইমিং কস্টিউম পরা নায়িকা। দর্শক তো ভাবলো এ সিনেমায় রগরগে কিছু না থেকেই যায় না। তারওপর একচেটিয়া সাফল্যে সিনিয়রদের চক্ষুশূল হয়ে গেলাম।
সঙ্গে চোখ রাঙানো শুরু করলো অন্ধকারের মাফিয়া। এতো ক্যাচাল কাঁহাতক আর ভালো লাগে বলেন! এই আক্ষেপ বাংলা সিনেমার এক সময়ের ব্যস্ত নায়ক আলেকজান্ডার বো-এর।
ম্যাডাম ফুলি আর লম্পট সিনেমা দিয়ে টিনেজ বয়সেই লাইম লাইটে আসেন এই মার্শাল আর্ট হিরো। কোপা শামসু নামেও তিনি সমধিক পরিচিত দর্শকদের কাছে।
সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদে শেষ শ্যুটিং করেছেন আলেকজান্ডার বো। এরপর থেকে মালয়েশিয়ায়। এখানে তার ব্যবসাটা ৩ বছরের।
প্রথম আড়াই বছর চুটিয়ে ব্যবসা করেছেন বটে, কিন্তু মালয়েশিয়ার মুদ্রামান কমতে থাকায় গত ৬ মাস ধরে চ্যালেঞ্জটা কঠিন হয়ে পড়েছে এখানেও। তবুও চলচ্চিত্র নয়, ব্যবসাটাই এখন তার মূল টার্গেট।
অনেকটা অভিমান করেই দেশ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে মালয়েশিয়ায় এখন পুরোদস্তুর … … .
অনেকটা অভিমান করেই দেশ থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে মালয়েশিয়ায় এখন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী তিনি। দেশ থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে মালয়দের কাছে পাইকারি বেচেন। কুয়ালালামপুরে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম সিলভার মুন।
বৃহস্পতিবার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার মুখে তাকে বসে থাকতে দেখা গেলো আমপাঙে, বাংলাদেশ হাই কমিশনে। ব্যবসা বিষয়ক কাজেই এসেছেন।
প্রথমেই বাংলা সিনেমার ভবিষ্যত সম্পর্কে জানতে চাইলে দরাজ গলায় ‘উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর’ বলেই থেমে গেলেন।
এমন জবাবে প্রথমে খটকা লাগলেও একটু পরই কষ্ট ফুটলো বিষণ্ণ চোখে। এখনো ৩টা সিনেমা তার হাতে। মুক্তির অপেক্ষায় আছে আরও গোটা আটেক। মুক্তি পাওয়া ১১৮ সিনেমার ভেতর এখনও ঘুরপাক খায় তার মন।
তাই বলেন, ‘হলিউড-বলিউড়ে বয়স ৫০ পেরুলে রিয়েল হিরো হয়। আর আমাকে দেখেন, ৪০ এর ঘরে যেতে না যেতেই ব্যবসা করতে বিদেশ আসতে হলো। একে তো সিনেমার ভেতর কখন কোথায় কি ঢুকছে বলা মুশকিল। তারওপর পরিকল্পিতভাবে চলচ্চিত্রটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে।
ফেলে আসা সময়ের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, দেশে একের পর এক সুপার ডুপার হিট সিনেমা উপহার দিয়েছি। কতো প্রডিউসার আমার নামের ওপর দিয়ে মুনাফা তুলেছে।
অন্যরা এক দুই শিফট কাজ করতো দিনে। আমি করতাম ৩ শিফট। ভোর ৫টায় বাসায় ফিরে ফের সকাল ৮টায় বেরিয়ে যেতাম। এই শিল্পটাকেই তো জীবন জেনে এসেছি এতদিন।
তাহলে বাংলা চলচ্চিত্রের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো কী করে? এবার প্রশ্নের উত্তরে একটু বুঝি দীর্ঘশ্বাসই ছাড়লেন তিনি। বললেন, কষ্ট থেকে বলেছি ভাই। এতদিন ধরে এতো পরিশ্রম করলাম। খারাপ বলি কী করে?
কিন্তু আপনার সিনেমায় রগরগে দৃশ্য ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে আপনার ভূমিকা কী ছিলো জানতে চাইলে মার্শাল আর্ট এর এই ব্লাকবেল্টধারী বলেন, আমি সব সময়ই প্রতিবাদ করেছি।
আমাকে বলা হতো সব ঠিক আছে। এ নিয়ে মনকষাকষি নেহায়েত কম হয়নি। কেবল মামলা ঠোকাটা বাকি ছিলো। কিন্তু কার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকবো বলেন? ওদের সঙ্গেই তো আমার কাজ করতে হতো?
No comments:
Post a Comment